Monday, August 31, 2015
শ্রীমতী জন এডওয়ার্ড হ্যারোওয়ের চিঠি
অনুবাদ : অর্ক চট্টোপাধ্যায়
[জ্যানেট ফ্রেম (১৯২৪-২০০৪) ক্যাথারিন ম্যান্সফিল্ডের পর
হয়তো নিউজিল্যান্ডের সব থেকে বিখ্যাত লেখিকা। প্রধাণত ঔপন্যাসিক এবং গল্পকার হিসেবেই
তাঁর খ্যাতি Owls Do Cry (১৯৫৭) কিম্বা Faces in the
Water (১৯৬১) জাতীয় বইয়ের জন্য, যদিও তিনি Pocket Mirror (১৯৬৭)
এর মতো কয়েকটি কবিতার বইও লিখেছেন। এখানে তাঁর একটি অখ্যাত এবং অগ্রন্থিত
গল্পের সংকলন Between Father and the King (২০১২) থেকে 'Letter
from John Edward Harroway' শীর্ষক অনুগল্পটি অনুবাদ করলাম। ]
আশা করি কয়েকটা ব্যপারে আপনার ভুল শুধরোতে চাইলে অপরাধ নেবেন না। প্রথমত,
অভয় দ্যান তো বলি, আপনি যেসব চিন্তাভাবনাকে আমার চিন্তাভাবনা বলে চালিয়েছেন, সেগুলো
মোটেই আমার নয়। আমি যখন আমার স্বামীর কবরে দেবো বলে ফুলগুলো নিয়ে যাচ্ছিলাম, আপনি
যা বলেছেন আমি কোনোভাবেই সেসব ভাবছিলাম না। হ্যা, দিনটা মিহি ছিলো
বটে, আর দুখী আমি অবশ্যই ছিলাম, টেডের কবরে সচরাচর যেতে পারি না বলে। তা বলে আমি মোটেই
ওখানে থাকতে বা ঘাসের ওপর শুয়ে পড়তে চাইছিলাম না, যেমনটা আপনি বলেছেন আরকি।
আর না, এর সঙ্গে স্নানের কোনো সম্পর্ক নেই। এটা ঠিক যে একদিন রাতে স্নান করে বাথটাব
থেকে বেরোতে পারছি না দেখে আমি খুবই নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম; আমার পিঠ এবং কাঁধের ব্যথার
ক্ষেত্রে আপনার বয়ান মিথ্যে নয়, আর আমার হাত দিয়ে আমি কোনো কিছুই ঠিক করে ধরতে পারছিলাম
না, তাও ঠিক। যদি আপনি এগুলোই বলতে চান তবে আপনার আরো
বলা উচিৎ ছিলো যে মাঝেমাঝে আমি গ্যাস জ্বালানোর সময় দেশলাই জ্বালাতে গিয়ে ঘেঁটে
ফেলি কিম্বা কখনো কখনো সসপ্যান, কেটলি বা টি-পট হাত দিয়ে তোলাটাও অসম্ভব মনে হয়।
কয়লার বালতির ঢাকা খোলা অত্যাচার হয়ে ওঠে। আপনি যেভাবে গোটা দুনিয়াকে জানান দিয়েছেন
সেটা আমার মোটেই ভালো লাগেনি, কিন্তু চুপিচুপি বলতে গেলে, আপনাকে ধন্যবাদ দেবো আমার
ব্যপারে সংবেদনশীল হবার জন্য। যদিও আবার বলছি, আপনি আমাকে স্নান নিয়ে, কবর নিয়ে,
আর গাড়ির চাকার নীচে আমার মাথা চলে আসা সংক্রান্ত যে সব ভাবনা জোর করে ভাবিয়েছেন,
সেগুলো আমি কখনই নিজে থেকে ভাবিনি বা ভাবিনা। কি ভয়ানক ব্যপার! আর শেষে
আপনাকে বলতে চাই, যদিও একথা ঠিক যে আকাশের দিকে তাকালে আমার মাথা ঘোরে, চোখে অন্ধকার
দেখি, কিন্তু এটা একেবারেই ঠিক নয় যে আমি মেঘ দেখতে ভালবাসি বলে বারবার আকাশের
দিকে তাকাই। আমি জানি, কেউ কেউ মেঘ দেখতে ভালবাসে। কিন্তু আমি কোনদিনই তাদের দলে নই;
তারা সাবানের ফ্যানা হতে পারে কিম্বা আজবেসটাস শিটের নাটবল্টু, তাতে আমার কিচ্ছু
এসে যায় না।
আশা করি আপনি যদি আমায় নিয়ে আবার কোনো গল্প
লিখতে চান (যদিও আমি চাইবো আপনি না লেখেন) তাহলে না বানিয়ে সত্যি কথা লিখবেন।
ফিলিস হ্যারোওয়ে
বি: দ্র: আমার বাবা-মায়ের কবরে ঘাস বেড়ে উঠেছে
কারণ তাঁরা এমনটাই চেয়েছিলেন; এমন না যে আমি আমার পেনশনের টাকা থেকে
কয়েক শিলিং খরচ করে তাদের জন্য ফুল কিনিনা।
পি. এইচ.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment